উপসংহারঃ
থাইল্যান্ড থেকে ফিরে আসার পর থেকেই পূর্ণিমা বুঝতে পারছিলো সে সুস্থ হয়ে উঠছে। থাইল্যান্ডে তার বিদেশি পুরুষদের সাথে রাত্রিযাপনের কথা ফাহাদ জানতেও পারে নি।
শুধু মাত্র রাশেদের সাথে সেক্স করার সময় ফাহাদ সারাদিন ঘুরেঘুরে ক্লান্ত হয়ে সত্যি সত্যি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো। কিন্তু বাকি তিন রাত, পূর্ণিমার নির্দেশেই রাশেদ ফাহাদকে ছলে-কলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মরার মতো ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলো।
ফাহাদ কিছু জানতেও পারে নি। দেশে ফিরে এসে পূর্ণিমা সুস্থ হয়ে উঠার লক্ষণ দেখে বরং ফাহাদ খুশিই হলো। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পূর্ণিমা যে ভয়াবহ অসুখের শিকার হয়েছিলো, তা থেকে সেরে উঠছে দেখেই ফাহাদ খুশি। এত বড় ধকল কাটিয়ে আস্তে আস্তে সুস্থ হতে একটু সময় লাগছে, এর মাঝে অল্পস্বল্প জরুরি কাজে বাইরেও যাচ্ছে পূর্ণিমা।
ফিরে আসার পর, প্রথম কয়েকদিন পূর্ণিমা স্বপ্ন দেখেছে তবে সেগুলো দুঃস্বপ্ন নয়, সেক্স রিলেটেড কিছুতো নয়ই। এক সপ্তাহ পরে পূর্ণিমা বুঝতে পারলো সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। কোনপ্রকারের স্বপ্নই সে আর এখন দেখছে। আস্তে আস্তে কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো সে। কিন্তু মাঝেমধ্যে সেই ভয়াবহ স্মৃতিগুলো মনে পড়তেই সে শিউরে উঠত।
এরমধ্যে একদিন সাইকোলজিস্ট শামসুন নাহারের সাথেও দেখা করতে গিয়েছিলো সে। পূর্ণিমা সুস্থ হয়ে উঠেছে জেনে বিস্ময়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
– কি এমন করলে যে আচমকা সুস্থ হয়ে গেলে?
– আপনার কথা মতো দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। আসার পর থেকেই দুঃস্বপ্ন দেখা বন্ধ, আর তার কয়েকদিন পর একবারে স্বপ্ন দেখাই বন্ধ।
– ফাহাদের সাথে সঙ্গমের ব্যাপারে যে পরামর্শ দিয়েছিলাম। সেটা ফলো করেছিলেন?
– হ্যাঁ। একারণেই সুস্থ হয়ে উঠেছি বোধহয়।
শামসুন নাহার স্পষ্ট বুঝলেন পূর্ণিমা মিথ্যা বলছে। এতদিন ধরে তিনি এই পেশায় আছেন। সত্যমিথ্যা আলাদা করার দক্ষতা তার ভালোই আছে। তাও স্বাভাবিকভাবে জিজ্ঞেস করলেন,
– তোমার কেইসটা কি আমরা তবে অফিসিয়ালি ক্লোজড করে দিবো?
– এটাই কি ভালো হয় না? এতো নোংরা একটা ব্যাপারে আর কি গবেষণা করবেন? সমাধান যেহেতু হয়েই গেছে।
– দেখো পূর্ণিমা, আমি তোমাকে ভয় দেখাতে চাচ্ছি না। তবে যে জিনিষ আচমকা চলে যেতে পারে সেটা আচমকা ফিরেও আসতে পারে। তাই আমি চাচ্ছি সমাধানের চেষ্টা আমি চালিয়ে যাই। যাতে তুমি কিংবা অন্যকেউ ভবিষ্যতে এই সমস্যায় পড়লে আমরা তাদের বাঁচাতে পারি।
– ঠিকাছে আপনি আপনার কাজ চালিয়ে যান। তবে আমার নাম সবজায়গা থেকে মিটিয়ে ফেলুন প্লিজ,
– সে তুমি ভেবো না। গোপনীয়তার ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ সচেতন থাকবো।
– ঠিকাছে তবে।
এরপর কেটে গেছে আরো কয়েকমাস। পূর্ণিমা খেয়াল করলো সে আস্তে আস্তে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। স্বাভাবিক স্বপ্ন। পূর্ণিমা ব্যস্ত জীবন যেনো পুনরায় স্বাভাবিক হয়ে পড়লো। তবে মাঝেমধ্যে অনলাইন চ্যাটে তাঁর কথা হয় রাশেদের সাথে। রাশেদ তাকে প্রায়শই বলে আবার থাইল্যান্ডে কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে যেতে।
পূর্ণিমা জানে, গেলে তারই লাভ হবে। কিন্তু যে নারকীয় যন্ত্রণা সে ভোগ করে আস্তে আস্তে আবার সুস্থ জীবন, স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছে তাতে আর কোন রিস্ক নেয়া চলবে না। সে এসবে জড়িয়ে আর কোন বিপদে পড়তে চায় না।
সমাপ্ত।
লেখক/লেখিকা: অর্বাচিন (Orbachin)
এখানেই শেষ হলো নায়িকা পূর্ণিমাকে নিয়ে আমার লেখা এই ফ্যান্টাসি গল্পের।