সর্ষের মধ্যে ভূত (২য় পর্ব)

এই গল্পের অংশ সর্ষের মধ্যে ভূত

সুস্মিতা আর আমার মাঝে অর্ঘ্য বসলো। বিতান গিয়ে সুস্মিতার পাশে বসলো।
সুস্মিতা একটা গোলাপি শাড়ি পরেছে। গোলাপি ব্লাউজ, কালো ব্রেসিয়ার। সুস্মিতা ঘরে একজন হাউসওয়াইফ হলেও বাইরে একজন শিক্ষিকা। সাজগোজ করুক আর না করুক ও রূপসী। ওর শরীরে এক বাচ্চার মায়ের পরিনত ছাপটাও আকর্ষণীয় লাগে। কালো ব্রায়ের লেস উঁকি দিচ্ছে কাঁধের কাছে। বিতানের চোখ আটকে যাচ্ছে।
মনে মনে ভাবলাম ছোঁড়া তোমার দেখছি সাহস কম নয়। তোমার চেয়ে নয় বছরের বড় পরস্ত্রীকে ঝাড়ি মারছো- তাও আবার তার স্বামীর সামনে।
ম্যাজিক শুরু হতেই নজর করলাম- কেবল অর্ঘ্যই সবচেয়ে মন দিয়ে ম্যাজিক দেখছে। আর মাঝে আমাকে অবান্তর সব প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে। সুস্মিতার সাথে বিতান অনবরত বকবক করে যাচ্ছে। সুস্মিতা সর্বদাই মিতভাষী কিন্ত এই ছেলের যে পেটে পেটে এত দম জানতাম না।

ছেলেমানুষী ম্যাজিক শো দেখতে আমার ভীষন বোর লাগছিল। আমি কল্পনা করছিলাম- লেডি কিলার হ্যান্ডসাম মাড়োয়ারি বিনোদ নাকি অল্পবয়সী তরতাজা বিতান- কাকে বেশি সুস্মিতার সাথে মানানসই লাগবে।
সুস্মিতা যদি সত্যিই তার চাহিদা থেকে কোনো এক্সট্রা-ম্যারিটাল রিলেশন করে তবে সেটা বিতানকে বেছে নেবে। বিতান অনেক বেশি নিরাপদ। বয়স ভীষন কম। তাছাড়া ঘরের কেচ্ছা বাইরে যাবার সম্ভাবনা নেই।
কিন্তু বিনোদের ক্যারিশমা যেকোনো মহিলাকে যে কাবু করে দিতে পারে- তা আমি নিজের চক্ষে দেখেছি।

মনে মনে হাসছিলাম বিতান তুমি যতই ঝাড়ি মারো আমার সুস্মিতা হঠাৎ করে যখন তোমাকে বলে বসবে ছোটো ভাই আমার, তখন বুঝবে মজা।

ম্যাজিক শো থেকে ফিরে একটা ব্যাপারই বুঝতে পারলাম বিতানের মত বাচ্চা ছেলের পক্ষে সুস্মিতার মত ম্যাচিওর নারীকে পটানো জীবনে সম্ভব নয়। সুস্মিতা ওকে ভীষন স্নেহ করে। তাতে এড্রিনালিনের তাড়নায় বিতান অনেক কিছু ভেবে বসে।

কিন্তু বিনোদ? ওকে যতদূর চিনি ও হাল ছেড়ে দেওয়ার ছেলে নয়। যার কাজটাই ছিল বিবাহিত মহিলাদের শয্যাসঙ্গী হওয়া। অগাধ পয়সাও সে খরচ করত এর জন্য।

বৃষ্টিটা নেমেছে আজ বেশ। অফিস থেকে ফিরবার পর ইচ্ছে করছিল লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে যাই। সে সৌভাগ্য আর হল কই। অর্ঘ্য আমার ওপর দাপাদাপি করতে থাকলো। ছেলের আদর কোন বাবা না ভালোবাসে। তাছাড়া ও একাইতো, খেলাধুলা করবার সঙ্গী ওর কেউ নেই। সেই বাবা-মাই ভরসা। সুস্মিতাকে বলেছিলাম আর একটা বেবির জন্য। সুস্মিতা বলেছিল অর্ঘ্য আরেকটু বড় হোক।

সুস্মিতা পাশের ঘরে এতক্ষন কি করছে কে জানে? আমি ঘড়ির দিকে তাকালাম সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা। জানালার শার্সি দিয়ে দেখা যাচ্ছে পাশের মাঠটায় জল জমে গেছে। আমি অর্ঘ্যকে বললাম যাওতো দেখো মা কি করছে?
অর্ঘ্য দৌড়ে গেল এবং দৌড়ে এসে বলল মা মোবাইল নিয়ে গেম খেলছে।
সুস্মিতা আসলে গেম খেলছে না। ফেসবুক করছে। অর্ঘ্যর কাছে ফেসবুকও একটা গেম। কিন্ত সুস্মিতা হঠাৎ একা নিভৃতে ফেসবুক করছে কেন?

মাঝে মাঝে এমন সন্দেহ আমাকে উত্তেজিত করে তোলে। প্যান্টের ভেতর অস্ত্রটা ফুঁসছে।

নীচ থেকে কেউ ডাক দিচ্ছে মনে হল। আমি এবার পাশের ঘর থেকেই বললাম- সুস্মিতা দেখতো নীচে কে?
সুস্মিতা নিচে গেছে কিনা জানি না। আমি উঠে দেখলাম নিচে বৃদ্ধা বুলুপিসি দাঁড়িয়ে। সুস্মিতা বুলুপিসির সাথে কথা বলে উপরে উঠে আসে।
বৃদ্ধার বয়স প্রায় সত্তর। ধেপে ধেপে হাঁটেন। কেউ কোথাও নেই। পাশের ওই ইঁটের পুরোনো বাড়িটায় একা থাকেন। অত্যন্ত গরীব। পুরসভায় সুইপারের কাজ করতেন বলে, এখন একটা পেনশন পান।
সুস্মিতা এসে বলল দেখ বেচারা বুড়ি লোকটা অসুস্থ। রাতে কিছু রুটি করে দিতে বলছে।
আমি বললাম হ্যাঁ নিশ্চই করে দেবে।

সুস্মিতা রান্না ঘরে যাবার পর আমি সুস্মিতার মোবাইলটা খুঁজছিলাম। ওর ফেসবুক প্রোফাইল আমিই তৈরী করে দিয়েছি। কাজেই পাসওয়ার্ডও আমার জানা আছে।
মনে ভাবছিলাম কারোর অনুমতি ছাড়া তার ব্যক্তিগত কিছু দেখা অপরাধ, সে যতই আমার স্ত্রী হোক।
পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করলাম।
সুস্মিতার যে ছবিটা আমি ডিপি করেছিলাম ওইটাই আছে। মিষ্টি হাসির এই ছবিটা সিমলায় তোলা। আমিই তুলেছিলাম।
কোন কিছু না ঘেঁটে চ্যাট লিস্টে গেলাম।
বিনোদ!
বিনোদের সাথে সুস্মিতার চ্যাট কিছুক্ষন আগেও হয়েছে। তড়িঘড়ি নিচের দিকে নামতে থাকলাম। গত দু-মাস ধরে ওদের কথোপকথন চলছে।
আমার বুকে যেন পেন্ডুলামের শব্দ হচ্ছে।
আমি চুপটি করে দেখলাম। সুস্মিতা রান্না ঘরে ব্যাস্ত। নীল রঙা শাড়িটাকে কোমরে আঁচল বেঁধে কাজ করছে। পেছন থেকে ব্লাউজের ওপরে ফর্সা পিঠটা দেখতে পাচ্ছি। গলার চেনটা চকচক করছে।

আমি মোবাইলের কথপোকথন গুলি পড়তে লাগলাম। প্রত্যেকটা কথোপকথনে পরিষ্কার বুঝতে পারছি- বিনোদ সুস্মিতাকে পটানোর চেষ্টা করছে। সুস্মিতা অবশ্য স্ট্রিক্ট। কিন্ত তবু ওর চ্যাটের উত্তর দিয়েছে।

যত পড়ছি, এই বৃষ্টির দিনের ঠান্ডায়ও আমি ঘামছি। কিন্তু সুস্মিতাকে নিয়ে আমার বিশ্বাস ভাঙেনি। ও কিন্ত বিনোদের ফাঁদে পা দেয়নি। ওর কমেন্ট দেখে পরিষ্কার বুঝতে পারছি ও বিনোদের অভিসন্ধি সম্পুর্ন বুঝতে পারছে।
কেবল একটা জিনিস বুঝতে পারছি না- তবুও ও বিনোদের সাথে চ্যাটে উত্তর দিচ্ছে কেন?

মাঝে মাঝেই বিনোদ রসিকতা করেছে। সুস্মিতা তাতে স্মাইলি ইমোজি দিয়ে নিজের অনুভুতি প্রকাশ করেছে। এটা বোঝা গেছে সুস্মিতা বিনোদের সাথে চ্যাট করাটা উপভোগ করে। এবং এতদূর পর্যন্তই থাকতে চায়।

প্রায় চ্যাটের কমেন্ট গুলো সব পড়া হয়ে এসেছে। তখনই একটা কমেন্ট ঢুকলো। বুঝতে পারলাম বিনোদ। অনলাইন দেখে বিনোদই পাঠিয়েছে…

চমকে উঠলাম শেষ কমেন্টটি বিনোদের- “তোমার সাথে দেখা করতে চাই?”
****

সুস্মিতা কি উত্তর দিল? সুস্মিতা কি সত্যিই দেখা করবে।
দুটো দিন উৎকণ্ঠায় কেটে গেছে। এদিকে অফিসে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ডেকে পাঠিয়েছেন। অফিসে বসে বিরক্ত হচ্ছিলাম। হায়দ্রাবাদে সেমিনার আছে ব্যাংকের। ম্যানেজার চান আমিই যাই। ম্যানেজারের নির্দেশকে না বলবার জো নাই। কার্যত তিনি অনুরোধও করেছেন। পনেরো দিনের ট্রিপ।
রাতে বাড়ী ফিরেই সুস্মিতাকে বললাম- হায়দ্রাবাদ যেতে হবে।

সুস্মিতা বলল- সেই তোমাকেই কেন যেতে হবে? অফিসে কি আর কেউ নেই?

—আঃ সুস্মিতা তুমিতো জানো আমার প্রেজেন্টেশন খুব ভালো। আমরা সকলে মিলে কিছুদিন ছুটি কাটিয়ে আসতে পারবো।

—আমি যাবো না। অর্ঘ্যর সামনে পরীক্ষা। আর পনেরো দিন! এসময় স্কুল থেকে এত ছুটি নিতেও পারবো না।

মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভেবেছিলাম কিছুদিন সুস্মিতা আর অর্ঘ্যকে নিয়ে ঘুরে আসবো। নাঃ তা হবার আর সুযোগ নেই।

ডিনারের পর সুস্মিতা এসে গলা জড়িয়ে ধরলো। বুঝলাম ও যেতে না পারার জন্য অনুতপ্ত।
বলল- সমু তুমি কি সত্যিই যাবে? অনেক দিন বাইরে কোথাও যাইনি। সামনের ছুটিতে আমরা একসঙ্গে ঘুরতে যাবো।

—-শিলং যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে। জানো ওখানে আমার এক মাসতুতো দাদা থাকে।

—শিলংয়ে তোমার মাসতুতো দাদা? কই বলোনিতো?

—আরে ওই অভিদা। আমাদের বিয়ের সময় আসেনি। তাই তুমি দেখোনি।

সুস্মিতা ঘুমিয়ে পড়েছে। দুদিন পর আমাকে বেরিয়ে যেতে হবে- তখন যদি বিনোদ আর সুস্মিতা দেখা করে? নাকি ওদের দেখা ইতিমধ্যেই হয়েছে।
সুস্মিতা কি রিপ্লাই দিল?
আমি দেখলাম সুস্মিতা ঘুমোচ্ছে। পাশের টেবিল থেকে মোবাইলটা নিলাম। ফেসবুক লগইন করতে পাসওয়ার্ড দিলাম। খুলল না। চমকে গেলাম। আবার দিলাম না খুলল না। সুস্মিতা কি পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করেছে? কিন্তু ও তো এ কাজ একা করতে পারবে না! তবে কে চেঞ্জ করতে সাহায্য করলো? বিতান?
বিতান না বিনোদ? কেমন একটা সন্দেহ হল সুস্মিতার প্রতি। না খামোকা সন্দেহ করছি নিজের স্ত্রীর ওপর। কিন্তু বিনোদতো অনেক এগিয়ে গেছে- চ্যাট রেকর্ডতো তাই বলছে। আমি নিশ্চিত বিনোদ সুস্মিতাকে বাগে আনার চেষ্টা করবে। কিন্তু সুস্মিতা যে নিজেকে বিনোদের প্রলোভন থেকে রক্ষা করতে পারবে, সে ভরসা আমার আছে।
কিন্তু ফ্যান্টাসির আগুনে আমি যেন পুড়ে যাচ্ছি। নিজের স্ত্রীকে পরপুরুষের সাথে দেখতে মরিয়া হয়ে উঠছি।

****
হায়দ্রাবাদ চলে আসবার পর দেখলাম যেহেতু আমার ব্যাংকটি রাষ্ট্রায়ত্ত তাই সরকার থাকবার এলাহী ব্যবস্থা করেছে।
আমি সুস্মিতাকে পৌঁছেই ফোন করলাম।
সুস্মিতা ফোন ধরেই বলল…
ঠিক মতো পৌঁছেছো তো?

–হ্যাঁ, অর্ঘ্য কোথায়?

—ও পড়তে বসছে। শোনো ভীষন তো গরম, ওখানে কীরকম?

—গরম! এখানে হলিডে ইনে থাকবার জন্য দারুন ব্যবস্থা। কেবল এসি আর এসি।
অনেকবার সুস্মিতাকে বলতাম বাড়ীতে এসি বসবো। সুস্মিতা বসাতে দেয়নি। সুস্মিতা যে কিপ্টে তা নয় ও মিতব্যয়ী- একজন স্ত্রীয়ের যা হওয়া উচিত।

এসময় মে মাসের গরম। কলকাতার মত হায়দ্রাবাদেও বেশ গরম কিন্তু। এই সরকারি যত্নে কোনো অভাব নেই।

প্রতিদিন সন্ধ্যে হলে সুস্মিতাকে ফোন করতাম। কিন্তু বাধ সাধলো দুদিন পর বুধবার। বিকেলে ফোন করলাম। কেউ ফোন তুলল না। আমি ভাবলাম সুস্মিতা হয়তো কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
রাত্রি আটটার দিকে ফোন করেও পেলাম না। টেনশন হচ্ছিল। সুস্মিতা আগে কখনো এরকম করেনি।
পরদিন সেমিনার হলে বসছিলাম। মন পড়েছিল বাড়ীতে।
ইতস্তত বোধ করছিলাম। হল থেকে বেরিয়ে এসে ফোন করলাম। দীর্ঘক্ষণ ফোন বাজাবার পর সুস্মিতা ফোন তুলল। আমি নিশ্চিন্ত হলাম। রাগত স্বরে বলে উঠলাম- কি ব্যাপার সুস্মিতা কাল থেকে ফোন তুলছ না কেন?

মৃদু স্বরে সুস্মিতা বলল বলো কি বলবে?
আমার মনে হল সুস্মিতা কিছু এড়িয়ে যাচ্ছে।
আমি বললাম অর্ঘ্য কোথায়?
ও খুব নিচু স্বরেই বলল পাশের ঘরে খেলছে।

–তোমার কি কিছু হয়েছে সুস্মিতা?

কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ। আমি ভাবলাম ফোনটা কেটে গেছে। তাই আবার বললাম হ্যালো?

সুস্মিতা বলল হ্যাঁ সমু বলো?

–কি হয়েছে সুস্মিতা?
কিছুক্ষণ থেমে থাকবার থাকবার পর বলল শরীরটা একটু খারাপ। তুমি ভালো থেকো। পরে ফোন করবো।

সেদিন আর কথা হয়নি।
আমি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরদিন খুব কাজের চাপ গেছে। অনেক রাতে ফিরলাম হোটেলে। তাই সুস্মিতাকে আর ফোন দিইনি।
আরো একটা দিন পরে ভোরে ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো। ওহঃ সুস্মিতার নম্বর।
সুস্মিতার সাথে কথা বললাম। ওকে আজকে স্বাভাবিক লাগছে। স্কুল যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে। আমি নিশ্চিন্ত হলাম।
কিন্তু সুস্মিতার হঠাৎ কি হয়েছিল? এই দু-তিনদিন ও ফোন ধরলো না কেন? সত্যিই এতটা অসুস্থ ছিল?

এক সপ্তাহ কেটে গেছে। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বেশ কয়েকবার খোঁজ নিয়েছেন। প্রতিদিন রাত্রেই একবার করে সুস্মিতাকে ফোন করার সুযোগ পাই। অর্ঘ্যর পরীক্ষার রুটিন পড়ে গেছে- এক মাস পর পরীক্ষা। সামনের মাসে সুস্মিতাদের স্কুলে ইন্সপেকশন আছে।

আমার অস্থিরতা দিনদিন বাড়ছে। বিনোদ আর সুস্মিতার যৌনতা কল্পনা করে বিকৃত কামনায় ভাসছি। রাতে ঘুমোতে পারছিলাম না। ইচ্ছে করছিল কোনো এডাল্ট সিনেমা দেখি।
‘আনফেইথফুল’ বলে একটা সিনেমা আমার কাছে ভীষন উত্তেজক লাগে। মাঝে মধ্যেই সিনেমাটা দেখি। এই সিনেমাটা আমি আর সুস্মিতা দুজনে মিলেও দেখেছি। কি মনে করে সিনেমাটা দেখতে শুরু করলাম। সিনেমায় ডায়না লেনকে সুস্মিতা মনে হচ্ছিল। ‘কনি’ চরিত্রে অলিভার মার্টিনেজকে বিনোদ মনে করছিলাম। রেস্টুরেন্টের বাথরুমে যৌন দৃশ্যে ডায়না লেনের নগ্ন পাছা যখন সঙ্গমের গতিতে দেওয়ালে ধাক্কা খাচ্ছিল- নিজেকে স্থির রাখতে পারলাম না। ট্রাউজারের মধ্যে হাতটা ভরে লিঙ্গটা ওঠানামা করতে থাকলাম। চোখ বুজে আসছিল, সিনটা পেরিয়ে গেছে। আমি কল্পনা করছি বিনোদ সুস্মিতাকে কোলে তুলে নিয়েছে। সুস্মিতার ফর্সা নিতম্ব ধাক্কা দিচ্ছে দেওয়ালে। বিকৃত বোধে নিজের স্ত্রীকে বিনোদের সাথে সঙ্গমের কল্পনায় হস্তমৈথুন করছি। পাপ-পুণ্যের বিচার না করে পতিব্রতা-সন্তানস্নেহ পরায়ণা শিক্ষিকা সুস্মিতাকে ব্যভিচারী করে তুলছে আমার ফ্যান্টাসি। লিঙ্গের ওঠানামায় আমি আর কোনো ঘৃণা বোধ করছি না। শরীর চাইছে আমার প্রিয়তমা স্ত্রী সুস্মিতাকে; মন চাইছে আমার স্ত্রীয়ের সাথে বিনোদের কামনা। হ্যাঁ আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি আমি চাইছি সুস্মিতাকে ভোগ করুক পরপুরুষ। আমার বাচ্চার খাওয়া মাইটা চুষে আরাম দিক তাকে। তার যোনিতে ঢেলে দিক বীর্যরস। বিনোদের ফর্সা পুরুষালি দেহ আর সুস্মিতার ফর্সা ম্যাচিওর নারী শরীর মিলে মিশে একাকার হয়ে যাক।
ধরে রাখতে পারলাম না। আমি নিঃশেষিত হলাম। তীব্র গ্লানি কাজ করছে আমার মধ্যে।
সুস্মিতা আমাকে মাফ করে দাও- আমি অস্পষ্ট ভাষায় বললাম।

সকাল হতেই সরকারদা আমাকে ফোন করলো। বিজু সরকারকে নদীয়ার ব্যাঙ্ক শাখা থেকে পাঠানো হয়েছে। ওর ছেলে হায়দ্রাবাদে চাকরি করে। দুজনে ঠিক করলাম আজ সেমিনার ফাঁকি দিয়ে লাঞ্চ আওয়ারের পর ঘুরে আসবো। হায়দ্রাবাদ শহরটাও ঘুরে আসা যাবে।

বিকেলে কিছু কেনাকাটা করলাম। বিয়ের প্রথম দিকে সুস্মিতার জন্য গিফট কেনা ছাড়া অন্য কিছু কখনো একা কিনিনি। সুষ্মিতাও কখনো আবদার করে না ওটা কিনে দাও, এটা কিনে দাও বলে। আমরা দম্পতি দুজনেই রোজগেরে হলেও অর্ঘ্যর ভবিষ্যৎ গড়বার তাড়নায় থেকে গেছি। মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবি স্বচ্ছল আমাদের পরিবারে অভাব না থাকলেও সুস্মিতা অতিরিক্ত অর্থব্যয়ে নারাজ। ওর অনেক শাড়ি আছে, ওর কখনো শাড়ি নিয়ে চাহিদা নেই। কেবল একটা নেকলেসের কথা বলত। বিবাহিত জীবনে কেবল ওইটুকুই দাবি করেছে ও আমার কাছে।
সরকারদাকে নিয়ে মলে গিয়ে একটা নেকলেস কিনে ফেললাম দুম করে। ঠিক করলাম গিয়ে চমকে দেব। কার্ডে পে করলাম তেইশ হাজার টাকা।
অর্ঘ্যর জন্য একটা ক্রিকেট ব্যাট কিনলাম। ইচ্ছে আছে সামনের বছর ওকে ক্রিকেট কোচিংয়ে ভর্তি করে দেব। তার মা পড়া ছাড়া খেলাধুলায় রাজি নয়। সুস্মিতাকে বুঝিয়ে রাজি করাতে হবে।

হোটেলের রুমে ঢুকতে রাত্রি হয়ে গেল। স্নান না সেরেই ডিনার সেরে নিতে হল। রুমে ফিরে স্নান করে ঘড়ির দিকে তাকালাম রাত্রি ন’টা পনেরো। সুস্মিতাকে দুবার পর পর ফোন করার পরও কেউ ফোন তুললো না।
বুঝতে পারছিলাম না সুস্মিতা এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন হল কিভাবে। প্রথমে রাগ হচ্ছিল। পরে ভাবলাম নিশ্চই ও ফোন থেকে দূরে আছে।

প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। ডিনার সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম। এগারোটার দিকে ফোনটা বেজে উঠলো। ওপাশ থেকে সুস্মিতার গলা–
সমু ফোন করেছিলে?

—হ্যাঁ, কি করো বলতো? কোথায় ছিলে ফোন ধরতে পারছো না?

—সমু, বুলু পিসি খুব অসুস্থ। বেচারি একা বৃদ্ধা। ওর বাড়ীতে গিয়ে কিছু টুকিটাকি রেঁধে দিলাম। কি করি বলোতো? অসহায় মানুষ।

আমার সত্যি দয়া হল। রাগ কমে গেল। সুস্মিতা বরাবরই এরকম। বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে ও। একবার বড় বৌদি খুব অসুস্থ হয়ে কলকাতায় ভর্তি হয়। সুস্মিতা নিজে দায়িত্বে বড়বৌদির দায়িত্ব সামলে ছিল।
এক কথায় সুস্মিতা কঠোর পরিশ্রমী। কখনো রূপচর্চায় বেশি সময় দিতে তাকে দেখিনি। সত্যিকারের সুন্দরীদের সাজাবার প্রয়োজন পড়েনা। তেত্রিশ বছর বয়সে একটা বাচ্চা জন্ম দেবার পর তার ভরাট গঠন না সাজলেও লোকের নজর টানবে। তার মিষ্টি ফর্সা মুখ খানা দেখে যে কেউ তাকে ভরসা করতে পারে। স্বামী-সন্তান-পরিবার-চাকরি এইটুকুই তার বাসনা, ব্যস।

সুস্মিতা বলে উঠলো- কি হল সমু? খাওয়া হয়ে গেছে? তোমার আজ সেমিনার কেমন গেল?

—এই তুমি আমায় ঘুম ভাঙালে। অর্ঘ্য কোথায়।

—তোমার ছেলেও ঘুমিয়ে পড়েছে। কবে ফিরছো?

একটু মজা করে উত্তর দিলাম- নিশ্চিন্তে প্রেম করো। হঠাৎ করে এসে চমকে দেব না। আরো পাঁচ দিন।
সুস্মিতাও প্রতুত্তরে মজার ছলে বলল আমার প্রেমিককে বলে দেব আমার স্বামী এখন আসতে অনেক দেরী।

—তা তোমার প্রেমিকটি কি এখন বাড়ীতে তোমার হাতের রান্না খাচ্ছে?

—বলব কেন? বলেই সুস্মিতা হেসে বলল তবে আমার স্বামীটি দিন দিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছে।

—তোমার প্রেমিকের চেয়ে কি বেশি অসভ্য আমি?

সুস্মিতা এবার বিরক্ত হয়ে বলল ছাড়োতো এসব কথা। আর হাঁ ওষুধ খেয়েছো?
—এই যা, খেতে ভুলে গেছি। ওকে রাখছি এখন। কাল ফোন করবো। আর তোমার প্রেমিককে বলে দাও গুড নাইট।

–গুড নাইট।

ফোনটা রাখবার পর ঘুমটা চলে গেল। মনে মনে ভাবলাম সুস্মিতার যদি সত্যি প্রেমিক থাকে? যদি আচমকা পৌঁছে দেখি বিনোদ আর সুস্মিতা মাখো মাখো অবস্থায়? আমি কি করবো?

উত্তরটা আমায় পুরুষাঙ্গ দিচ্ছিল- উপভোগ কর শমীক, উপভোগ কর। দৃঢ় পুরুষাঙ্গটা মুঠিয়ে ধরলাম। মাস্টারবেট করাটা ছাত্র বয়সে ব্যাড হ্যাবিট ছিল। তখন দূরসম্পর্কের কাকিমা, কলেজের বান্ধবী, পাড়ার বৌদি, সিনেমার নায়িকাদের কথা ভেবে মৈথুন করেছি। কিন্তু কখনো ভাবিনি নিজের স্ত্রী তথা আপন সন্তানের মায়ের কথা ভেবে মাস্টারবেট করতে হবে।
*******

পনেরো দিন বলতে বলতে কেটে গেল। বাড়ী পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত্রি হয়ে গেছে। ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি গিয়ে ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেই ছেলে কোলে উঠে পড়লো। সুস্মিতা পাশে দাঁড়িয়ে মৃদু হেসে বলল- বাবা কবে আসবে এই জন্য ক্যালেন্ডারে তোমার ছেলে দিন গুনে রাখে।
আমি ছেলের কপালে চুমু দিয়ে তার হাতে ব্যাটটা তুলে দিতে আনন্দ ধরে না।

রাতে ঘুমোনোর আগে নিয়মমাফিক সুস্মিতা পায়ে ক্রিম মাখছিল। আমি ঠিক করলাম পেছন থেকে গিয়ে চমকে দিব। সুস্মিতার পরনে ঘরোয়া আকাশি রঙা সুতির শাড়ি, কালো ব্লাউজ। নেকলেসটা নিয়ে গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। সুস্মিতা চমকে উঠলো, নিজের গলায় নেকলেসটা দেখে বলল- -বাব্বা! এটা কবে কিনলে? বললে না তো?
আমি যতটা সুস্মিতা খুশি হবে ভেবেছিলাম, ততটা দেখলাম না। একবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সুস্মিতাকে নেকলেসটা পরে দেখতে বললাম। প্রবল অনিচ্ছা স্বত্বেও ও সামনে এসে দাঁড়ালো। ওর ফর্সা গলায় অনবদ্য লাগছিল।
হঠাৎ করে ওর পিঠের দিকে নজর গেল। ফর্সা নির্দাগ, মসৃন পিঠে দুটো লালচে দাগ।
আমি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষন করলাম। একি ওর চিবুকের কাছেও লালচে একইরকম দাগ।
যেন কামড়ের দাগ। লাভ-বাইট নয়তো? আমি জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করলাম না। ওরকম দাগতো সুস্মিতার কখনো ছিল না। তাছাড়া দাগ দেখে বোঝা যাচ্ছে বেশি পুরোনো নয়।

বিনোদ কি সত্যি সুস্মিতার ঘনিষ্ট হয়েছে তবে? এই কামড় কি বিনোদের? সুস্মিতার সাথে কি ও বন্য সেক্স করেছে?
আমি কামোত্তেজনায় ফুটছি। সুস্মিতা বিছানায় আসতেই সুস্মিতাকে জড়িয়ে ধরলাম।
সুস্মিতা আঃ করে উঠলো, বলল- সমু আজকে নয়। শরীরটা ক্লান্ত লাগছে।
আমি সুস্মিতা না বললে কখনো জোর করিনি। পাশে শুয়ে পড়লাম। এক অন্য সুস্মিতাকে দেখছি। নাকি আমার চোখের ভুল? নাকি ফ্যান্টাসির জগতের নেশায় সুস্মিতাকে আমার অন্যরকম মনে হচ্ছে।
কিন্তু ওই দাগগুলো তো কামড়ের মতই? সুস্মিতা পাশ ফিরে শুয়ে আছে। মোলায়েম ফর্সা পিঠে ওই দাগ দুটো নজর কাড়ছে।
আমি ওই দাগের দিকে চেয়ে আছি। আমার হাত অজান্তে আমার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করেছে।

এই গল্পের পরবর্তী পর্ব আসছে…

গল্পটি কেমন লাগলো এবং পরবর্তীতে কোন ক্যাটাগরির গল্প চান? কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ!

Related Posts

Leave a Comment

error: Content is protected !!