আমার বউ সুমনা

গ্রামের ছেলে আমি। আমার নাম পবন। পড়াশোনাতে মোটামুটি ভালই ছিলাম। পড়াশোনা শেষ হবার পর বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারভিউ দিতে দিতে অবশেষে একটি কোম্পানিতে চাকরি পাই। বেশ ভালোই মাইনে। এক বছর চাকরি করার পর শহরে একটি ফ্ল্যাট কিনি। এরপরেই আবার বিয়ের জন্য দেখাশোনা শুরু হয় ও একটি সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আমার ধুমধাম করে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর ১১ বছর কেটে গেছে। ইতিমধ্যে আমি এক সন্তানের পিতা। আমার বউ সুমনা বেশ সুন্দরী এবং যথেষ্ট স্মার্ট। ভালোই চলছিল আমাদের সুখের সংসার।

ইতিমধ্যে আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে একটি নতুন পরিবার এসেছে। তার ছেলে ছেলের বউ বিদেশে থাকে। তিনি আপাতত ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা শুরু হয়। আমাদের থেকে তিনি কিছুটা বয়স বড় হলেও আমরা বন্ধুর মত মিশতাম। তিনি আমাদের ঘরে আসতেন এবং আমরাও যেতাম। উনার নাম শ্রাবণী।

একদিন শ্রাবণী আমাদের কথায় কথায় বলেন, মোটা এত সুন্দরী দেখতে ও কেন মডেলিং করছে না। বিষয়টা প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিলেও আস্তে আস্তে সুমনা মডেলিং জগত সম্বন্ধে বিভিন্ন প্রশ্ন ওনাকে করতে থাকে। তারপর তিনি বলেন এত লজ্জা করলে হবেনা চলো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ো দেখোই না কি হয়। দেখলাম সুমনা ও যথেষ্ট আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এরপর আমিও আর আপত্তি করলাম না।

উনি এক দিন আমাদেরকে একটি অফিসে নিয়ে গেলেন সেখানে নানা অ্যাঙ্গেলে সুমনার ফটো নেওয়া হলো। বলা হলো যদি সিলেকশন হয় তবে পরে জানানো হবে। আমরা তিনজনেই ওখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসলাম। এর শক্ত খারাপ পর শুভদার ফোনে একটি ফোন আসলো এবং ওই অফিস থেকে একটি মেয়ে ফোন করে বলল সুমনা সিলেক্ট হয়েছে এবং তার কয়েকটি ফটো তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে এজন্য আরেকবার তাকে স্টুডিওতে যেতে হবে। সুমনা খুবই খুশি হলো তার সঙ্গে শ্রাবণীয় অত্যন্ত উৎসাহ দিয়ে গেলো।

এরপর আমার অফিসের কাজের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। শ্রাবণী সুমনাকে নিয়ে বেশ কয়েকদিন স্টুডিওতে গিয়ে কয়েকটা ফটো শুট করিয়ে আনলো। কদিন পরে সেগুলো ওই কোম্পানির ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হলো। সত্যি বলতে ফটোগুলো দেখে আমিও খুব খুশি হলাম। আমার বউ এতদিন আমরা একসঙ্গে রয়েছি কিন্তু কোনদিন ওকে এত মায়াবী রূপে দেখিনি যতটা ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আমরা সবাই খুব খুশি হলাম। থেকে সুমনার কাজ বাড়তে থাকলো। ও বিভিন্ন জায়গায় ফটোশুট করত এবং অবশ্যই শ্রাবণী ওকে প্রচুর সাপোর্ট করতো।

এরমধ্যে একদিন শ্রাবণী সুমনা এবং আমাকে ডাকলো। বলল সুমনার ছবিগুলো বিদেশে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন এজেন্সি থেকে সুমনার ডিটেলস চাওয়া হয়েছে কারণ সুমনাকে আরো এক্সপ্লোর করতে হবে। এবং ভারতীয় মেয়েদের বিদেশীরা বরাবরই পছন্দ করে সেক্ষেত্রে সুমনা একেবারেই নতুন মুখ এবং অত্যন্ত স্মার্ট, তাই তারা এক্সপেক্ট করছে সুমনা অবশ্যই এক্সপ্লোর হবে। এবার কিছু শুটিং করা হবে ওকে নিয়ে এবং তার জন্য বিদেশেও যেতে হতে পারে। ব্যাপারটিতে আমার ভীষণ আপত্তি ছিলো। মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছিল না সুমনা।

তখন শ্রাবণী রীতিমতো আমাকে ধমক দিয়ে বললো, নিজের ইগোটাই ধরে রাখলে। মেয়েটির দিকে তাকালে না, ওর বিরাট ক্যারিয়ার এখানে পড়ে আছে। ও মোটেই বেহাত হচ্ছে না, সুমনা তোমারই থাকবে, কিন্তু দর্শককে ও অভিনয় করবে এবং নিজেকে এক্সপ্লোর করবে। আমি ভীষণ চিন্তায় পড়লাম। যাই হোক একদিন পর আমি সুমনাকে বললাম এগিয়ে যেতে। সত্যি বলতে সুমনা আনন্দে লাফিয়ে উঠে আমাকে প্রচুর চুমু খেয়েছিল সেদিন। শ্রাবণীও প্রচুর খুশি হয়ে আমাকে অনেক বাহবা দিলো।

যাই হোক, নতুন একটি ওয়েব সিরিজের জন্য নায়িকা হিসেবে সুমনার সঙ্গে চুক্তি করলো একটি সংস্থা। আগাম ৫লক্ষ টাকা দেওয়া হল এবং শুটিং কমপ্লিট হওয়ার পর আরো ৪৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে এই মর্মে চুক্তিটি করা হলো। আর হ্যাঁ কিছু উত্তেজক দৃশ্যও থাকবে। শুটিং হবে হিমাচল প্রদেশ এবং গোয়াতে। ওয়েব সিরিজের বিষয় পরকীয়া প্রেম।

যাই হোক শুটিং শুরু হবার দিন এগিয়ে এলো। যেহেতু সুমনা এই সেক্টরে একেবারে নতুন, তাই প্রোডাকশনের নিয়ম অনুযায়ী সুমনাকে ওয়েব সিরিজের নায়কের সঙ্গে নিরিবিলিতে কিছু সময় কাটিয়ে সখ্যতা বাড়ানোর জন্য এক সপ্তাহ আগেই গোয়াতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হলো। হিরো অবাঙালি, সুমনাকে স্বাগত জানানোর জন্য কলকাতা থেকেই রিসিভ করে নিয়ে যাবে, এমনটা ঠিক হলো।

নির্দিষ্ট দিনে আমি শ্রাবণী সুমনাকে নিয়ে এয়ারপোর্টে হাজির হলাম। হিরো একটু পরে উপস্থিত হলো, তাঁকে দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। প্রায় সাড়ে ছয় ফুটের ওপর লম্বা, অসাধারণ জিম করা বডি। আমি আর চোখে দেখে নিলাম সুমনা ওর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। বুঝলাম সুমনার খুবই পছন্দ হয়েছে ওকে। এরপর কিছুটা আলাপ পরিচয় হওয়ার পরে ও সুমনাকে নিয়ে এয়ারপোর্টের ভেতরে চলে গেলো। যেতে যেতে সুমনার হাত ধরে নিয়ে গেলো সে। আমি আর শ্রাবণী ফিরে আসলাম। আস্তে আস্তে শ্রাবণী আমাকে বললো, আগামী এক সপ্তাহ ওনাকে ছিড়ে খাবে ছেলেটি, এবং তাতে তুমি দুঃখ পেয়ো না, কারণ সুমনা নাকি ওকে বলেছে সেও তার সঙ্গে সময় কাটাতে ভীষণ উৎসাহী কারণ তার খুব পছন্দ হয়েছে!

… …
… … …
এরপর প্রায় দেড় মাস পর সুমনা ফিরে আসলো বাড়িতে। সেদিন রাত্রে শুয়ে শুয়ে অনেক গল্প করলাম আমরা। জানলাম গোয়াতে পৌঁছানোর পর প্রথম দুদিন ওরা খুব এনজয় করেছে। ওরা কেউই ঘর থেকে বেরোয়নি। ছেলেটি ওকে প্রথম দুদিন এত করেছে যে ওর হাঁটার শক্তি ছিল না। তারপর থেকে ওরা একেবারে স্বামী স্ত্রীর মতো করে থাকতো সেখানে। এরপর শুটিং চলাকালীন সবার সামনে নগ্ন করা হয়েছে বিভিন্নভাবে ও উত্তেজক সিনের শুটিং করা হয়েছে। আপাতত মাস ছয়েক লাগবে ওয়েব সিরিজটি বাজারে আসতে এবং সেটা দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে দেখা যাবে না শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দেশগুলোতেই দেখা যাবে। এবং প্রোডাকশনের প্রতিশ্রুতির মতো বাকি ৪৫ লক্ষ টাকার চেকও প্রোডাকশন পেমেন্ট করে দিয়েছে….

সমাপ্ত।

গল্পটি কেমন লাগলো এবং পরবর্তীতে কোন ক্যাটাগরির গল্প চান? কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ!

Related Posts

Leave a Comment

error: Content is protected !!